আমার ফেসবুক

Tuesday, June 30, 2009

উদাসী বৃষ্টি

অঝোর ধারায় ঝরছে বৃষ্টি
দমকা হাওয়া নিয়ে
মনটে যে তাই যাচ্ছে ভিজে
কষ্ট সয়ে সয়ে।

আষাঢ়ের এই বারিধারায়
উদাস হয় এ মন
ইচ্ছে করে তোমায় নিয়ে
ভিজতে সারাক্ষণ।

তুমি তো নেই আজ এ ক্ষণে
বৃষ্টিস্নাত দিনে
উদাস করা এ দিনটিতে তাই
তোমায় পড়ে মনে।।

Friday, June 26, 2009

যান্ত্রিকতার প্রতীক্ষায়

মাঝে মাঝে খুব যন্ত্রমানব হতে ইচ্ছে করে
কাজের মধ্যে ডুবে থেকে
মানবীয় অনুভূতিগুলো থেকে মুক্তি পেতে ইচ্ছে করে
শুধু ভেবে যাই কাজের মাঝে ব্যস্ত হয়ে
হয়তোবা জীবনের সকল দুঃখ ভুলে থাকা যায়।

আমি তাই এখন প্রচন্ড ব্যস্ততা চাই
ব্যস্ততার মাঝে ডুবে থেকে
নিজেকে একটা যন্ত্রমানবরূপে দেখতে চাই
মানবিক সব অনুভূতিকে পেছনে ফেলে
সমস্ত আবেগকে কবর দিয়ে
শুধু ব্যস্ত সময়ের পেছনেই ছুটতে চাই।।


৪ঠা জুন, ২০০৯

মোহভঙ্গ

কোন একদিন দেখেছিলাম স্বপ্ন তোমায় নিয়ে
দুজন মিলে হারাবো কোন দুরের অচিনপুরে
গড়বো মোরা সুখেরই নীড়
অচিনপুরের কোন এক নিভৃত প্রান্তরে।


কোন একদিন বেঁধেছিলাম সুর শুধু তোমায় নিয়ে
যে সুরের মুর্ছনায় হারাতাম মোরা দুজন মিলে
দুর পাহাড়ের ধারের কোন এক গহীন গাঁয়ে
যেথায় দামাল ছেলেরা ভেসে যায় উচ্ছলতার স্রোতে।


সাগরের তীর ধরে যখন হেঁটে বেড়াতাম দুজন মিলে
তুমি তখন গাইতে গান মাতাল করা সুরে
সে সুরের মোহে আবিষ্ট মন ভাবতো শুধু তোমায়
নিবিড় করে চাইতো তোমায় সাগরের নীলসীমায়।


কখন যেন দমকা হাওয়ায় ভাঙ্গলো সে স্বপন
তোমায় নিয়ে হলো না আর সুখের বীজ বপন
মাতাল করা সুরের মোহ হঠাৎ গেলো কেটে
স্বপ্নগুলো রঙ্গীন হয়ে আর আসেনা সন্নিকটে।।


২৯শে মে, ২০০৯

গন্তব্যহীন যাত্রা

আলো-আঁধারির মাঝে
নিঝুম এক সাঁঝে
হাঁটছি একা পথে
বুকে একরাশ কষ্ট নিয়ে।


বুকের মাঝে জমে থাকা কষ্টগুলো
যখন চেপে বসে পাথরের মত
ইচ্ছে করে যাই হারিয়ে অজানায়
হৃদয়ে নিয়ে সীমাহীন ক্ষত।


অশান্ত সাগরের বুকে ফুঁসে ওঠা ঢেউয়ের মত
হৃদয় যখন অশান্ত ঝড়ে
দিকভ্রান্ত পথিকের মত তখনই ছুটে যাই
ধু-ধু বালুকাময় মরুপ্রান্তরে।।


২২শে মে, ২০০৯

ফ্যান্টাসি

কখনও কখনও নিজেকে আকাশের মত মনে হয়
হৃদয়টাকে মনে হয় আকাশের মত বিশাল
বিশাল ঐ হৃদয় নিয়ে
জাগতিক না পাওয়ার বেদনা মাড়িয়ে
ভাবি শুধু পারতাম যদি করতে জয়
জাগতিক সব না পাওয়ার বেদনা।

কখনও কখনও নিজেকে সাগরের মত বড় মনে হয়
সাগরের বিশালতার মত নিজেকে বিশাল ভাবি
যত ঝড়-ঝঞ্চা আসুক, সাগরের ঢেউ এর মত
সবকিছুকে ভাসিয়ে দিতে পারব বলে বিশ্বাস করি।

আচমকা এক দমকা হাওয়া এসে
আমার সেই বিশ্বাসের ভিতগুলো নাড়িয়ে দেয়
কল্পনার রাজ্যে বসে আকাশ আর সাগরের মত ভাবনাগুলো
নিমেষেই বাস্তবতার আঘাতে জর্জরিত হয়ে যায়।

জীবনের কঠিন বাস্তবতা তখনই আঘাত করে
রেখে যায় মনের মাঝে সত্যের কঠিন পরশ
বুঝতে পারি সাগর ও আকাশের মত বিশাল আমি নই
যা কিছু ভাবি, সবই আমার কল্পনা
ফ্যান্টাসির রাজ্যে বসবাস।।


১৯শে মে, ২০০৯

দুঃখের সাগর

অস্থির কিছু সময়
অস্থির কিছু কল্পনা
ভাবায় আমায় সারাক্ষণ
দিয়ে যায় কিছু যন্ত্রণা।

এলোমেলো ভাবনাগুলো আজ
আঁকড়ে আছে হৃদয়ের ভাঁজে
রঙীন স্বপ্নগুলো কখন যেন
হারিয়ে গেছে গহীন অরণ্যের মাঝে।

অস্থির সময়ের ভাবনাগুলো
ফিরে আসে মোর স্বপ্নদুয়ারে
বেদনার কালো ভেলাটি আজ
ভেসে যায় মনের দুখের সাগরে।।


৮ই এপ্রিল, ২০০৯

সাগরের বুকে হারিয়ে যাওয়া কিছু স্বপ্ন

আমার একটা আকাশ ছিল
যে আকাশে শুধু তুমিই ছিলে
আর ছিল কিছু টুকরো টুকরো স্বপ্ন
যার বিচরণ ছিল শুধু তোমাকে ঘিরেই।

আমার একটা সাগর ছিল
আর ছিল একটি ভেলা
সেই ভেলায় করে তোমায় নিয়ে
দূর দিগন্তে মিশে গিয়ে
ভেসেছি কত সুখে।

আমার একটা স্বপ্ন ছিল
আর ছিল কিছু রঙ
স্বপ্নের মাঝে রঙ মাখিয়ে
তোমার পেলব হাতদুটি ধরে
ঘুরেছি কত অচিনপুরে।

আজ আমার সেই আকাশটা নেই
সাগরের সেই ভেলাটিও কোথায় যেন হারিয়ে গেছে
তোমায় নিয়ে দেখা রঙীন সেই স্বপ্নগুলো আজ
মুখ থুবড়ে পড়ে আছে সেই সাগরের বুকে
আর আমি বসে আছি আজও
অব্যক্ত যন্ত্রণার কিছু স্মৃতি নিয়ে।।


২৯শে মার্চ, ২০০৯

স্বাধীনতা মানে

আটত্রিশ বছর পর আজ এই দিনে বসে ভাবি
সত্যিই কি আমরা স্বাধীন?
স্বাধীনতার সত্যিকারের মানে কি আমরা বুঝি?
একাত্তরের এই দিনে যে লক্ষ্য নিয়ে বীর যোদ্ধারা
ঝাঁপিয়ে পড়েছিল শত্রুর কবল থেকে দেশকে বাঁচাতে
সেই লক্ষ্যে কি আজও পৌঁছাতে পেরেছি?


আজও যখন মানুষরূপী হায়েনারা
থাবা দিয়ে বেড়ায় প্রিয় এই লাল-সবুজের মাটিকে
স্বাধীনতাবিরোধীরা বুক ফুলিয়ে হেঁটে বেড়ায়
প্রিয় মাতৃভুমির এই ভূমিতে
তখনও কি আমরা ভাবি আমরা স্বাধীন?


স্বাধীনতা শব্দটি আজ বড়ই সস্তা
স্বাধীন দেশে থেকেও আজ আমরা পরাধীন
সেই মানুষরূপী হায়েনারা আজও পথঘাট দাপিয়ে বেড়ায়
দেশ নিয়ে এখনও তারা আঁধারের জাল বিছায়
সেই জাল ছিঁড়ে কবে আমরা আলোর মুখ দেখব?
কবে আমরা পূর্ণ স্বাধীনতার স্বাদ পাব?


২৬শে মার্চ, ২০০৯

স্বপ্নের ফেরিওয়ালা

আমি এক স্বপ্নের ফেরিওয়ালা
নানারঙের নানাঢঙের স্বপ্ন ফেরী করে বেড়াই
লাল নীল বেগুণী সবুজ রঙ মাখিয়ে
বিবর্ণ স্বপ্নকে তুলি রাঙিয়ে।

নীল বেদনার নির্মম আঘাতে
তোমাদের স্বপ্নগুলো কভু যদি হয় অমলিন
তবে ডেকো তোমরা আমায়
আমার স্বপ্নের ঝুলি থেকে তোমাদের দেবো
হরেক রঙের স্বপ্নেরই দিন।

আমি মুঠোয় ভরে স্বপ্ন বিলাই
মুঠোয় ভরে সুখ
আমার স্বপ্নের ঝুলি থেকে
হয়না তো কেউ বিমুখ।।



২১শে মার্চ, ২০০৯

ক্ষমা

তোমাকে আমি ক্ষমা করে দিয়েছিলাম অনেক আগেই
যেদিন তুমি আমার হৃদয়টাকে টুকরো টুকরো করে
রঙীন স্বপ্নগুলোকে রঙহীন করে দিয়ে
করেছিলে আমায় নিঃস্ব
সেদিনই তোমার সব অপরাধ আমি ভুলে গেছি।

কিন্তু তারপরও কি তুমি ভাল আছ?
একটি দিনের জন্যও আমাকে ভুলে থাকতে পারছ?
রঙীন দিনের যত স্বপ্ন দেখিয়েছিলে তুমি আমায়
খানিকটা হলেও কি আজ সেই স্বপ্নগুলো
তোমার মনের মনিকোঠায় আঘাত করেনা?

গোধুলীবেলার অস্তমিত সূর্যের মত
যেদিন আমার জীবন থেকে ঝড়ে গেল স্বপ্নগুলো
সেদিনই তোমায় আমি ক্ষমা করে দিয়েছি
তারপরও কি তুমি ভালো আছ?


১৬ই মার্চ, ২০০৯

শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা

শীতের ঝরে যাওয়া পাতার মত
স্বপ্নগুলো আজ গেছে যে শুকিয়ে
ঝরাপাতার মত স্মৃতির ক্ষত
হৃদয়টাকে দেয় আজ কাঁদিয়ে।

মনে পড়ে সেই দিনগুলো আজ
যখন হেঁটে বেড়াতাম নদীর পাড় ধরে
শীতের হিমেল হাওয়ার রোমান্টিকতায়
মন ভাসিয়ে দিতাম স্বপ্নরাজ্যের আধারে।

বর্ষার অবিরাম বারিধারায়
সিক্ত হয়েছে কত এ মন
হৃদয়ের শুষ্ক এই গ্রীষ্মে আজ
সে স্মৃতি কাঁদায় শুধু সারাটিক্ষণ।।


১১ই মার্চ, ২০০৯

অলীক কল্পনা

যদি কখনও আমায় মনে পড়ে যায়
খুলে দিও তোমার মনের দুয়ার
আমায় খুঁজে পাবে তুমি
তোমার হৃদয়ের মনিকোঠায়।

এত আঘাত তুমি করেছ আমায়
তবুও আমি ভুলিনি তোমায়
তোমার হাতে হাত রেখে
নদীর ধারে বসে থেকে
দিন কাটাবার স্বপ্ন তাই
আজও দেখে যাই।।


৯ই মার্চ, ২০০৯

অপূর্ণ ইচ্ছেগুলো

মাঝে মাঝে ইচ্ছে হয়
ঘড়ির কাঁটাটাকে জোর করে পেছনে সরিয়ে দেই
তাহলে ফিরে যেতে পারতাম
স্বর্ণালী সেই অতীতের সময়গুলোতে
নিরব, নিস্তব্ধ এই বর্তমান আর অনিশ্চিত ভবিষ্যতের বেদনায়
তাহলে আর কুঁকড়ে থেকে হৃদয়টা ক্ষতবিক্ষত হতো না।

মাঝে মাঝে ইচ্ছে হয়
জীবনটাকে ঝলমলে আলো দিয়ে আলোকিত করে রাখি
দুঃখ, কষ্ট, বেদনা নামক শব্দগুলোকে আস্তাকুঁড়ে ছুঁড়ে দিয়ে
জীবনটাকে করে তুলি ফ্লাডলাইটের আলোর মত আলোকময়।

মাঝে মাঝে ইচ্ছে হয় ছুটে যাই সাগরের সেই পাড়ে
যেখানে জীবনের জমে থাকা কষ্টগুলোকে
সাগরের জলের সাথে মিশিয়ে দিয়ে
জীবনকে শুরু করা যায় নতুন করে।

মাঝে মাঝে ইচ্ছে হয় হাত বাড়িয়ে ধরি পূর্ণিমার ঐ চাঁদ
যেখানে লুকিয়ে থাকে অব্যক্ত সব অনুভূতি
জাগতিক সকল না পাওয়ার ব্যাথা ভুলে
ভেসে যেতে ইচ্ছে করে পূর্ণিমার ঐ স্রোতে।।

৪ঠা মার্চ, ২০০৯

অস্থির সময়

দেশটা কি আজ গেলো রসাতলে?
স্বপ্নগুলো গেলো শুধুই জলে?
যে স্বপ্ন দেখেছিলাম একাত্তরের পরে
নতুন দেশটি গড়ার স্বপ্ন নিয়ে।

চারিদিকে আজ শুধুই কান্নার শব্দ
স্বজন হারানোর ব্যথায় সবকিছুই স্তব্ধ
খাঁচায় বন্দী পাখির মত কাটছে সবার দিন
অস্থির পায়চারীতে মুখটি সবার অমলিন।।



২৭শে ফেব্রুয়ারী, ২০০৯

চাঁদের প্রতি ঈর্ষা

চাঁদকে আজ আমার খুব ঈর্ষা হয়
কারণ চাঁদ আজ তোমার খুব কাছে
চাইলে সে তোমায় আজ
ছুঁয়ে যেতে পারে তার আলো দিয়ে।

অথচ একটা সময় ছিল
যখন ছিলাম আমি তোমার খুবই কাছে
ইচ্ছা হলেই পারতাম তোমায় ছুঁয়ে দিতে
পারতাম তোমার হাত দুটি ধরে
সাঁঝের বেলায় নদীর ধারে বসে থাকতে।

অনেকটা দিন পার হয়ে এসে
আজ তাই চাঁদকে বড়ই ঈর্ষা হয়
চাঁদের স্পর্শে তুমি যেমন আলোকিত হও
তেমন আলোতে তোমায় রাঙিয়ে
তোমার পাশে থাকতে ইচ্ছে হয়।।


২৪শে ফেব্রুয়ারী, ২০০৯

পথের শেষে রঙের আশা

তেপান্তরের মাঠ পেরিয়ে
অনেকটা পথ পাড়ি দিয়ে
যাই চলে এক দূর অজানাতে
নিকশ আঁধারের কোন রাত্রিতে।

স্বর্ণে মোড়া স্বপ্নগুলোতে যখন
তিল তিল করে জং ধরে গেলো
বেনীআসহকলা’র মত দিনগুলো তখন
হয়ে ওঠে কেমন যেন সাদাকালো।

মনের নীল আকাশে আজ
জমেছে কালো মেঘের ছায়া
তেপান্তরের মাঠ পেরিয়ে তাই
খুঁজে বেড়াই রঙধনুর মায়া।।


২০শে ফেব্রুয়ারী, ২০০৯

এলোমেলো পঙক্তিমালা

বহুদিন পর আজ
কবিতার ডায়েরীটা নিয়ে বসেছি
এই জানালার ধারে
নতুন কোন কবিতা লেখার ইচ্ছে নিয়ে।

কিন্তু কেন যেন ছন্দেরা আজ বেঁকে বসেছে
কাব্যভাষার পঙক্তিমালারা আজ বিদ্রোহ করেছে
ভরাট পূর্ণিমার রোমান্টিকতার এই সন্ধিক্ষণেও
ছন্দেরা আজ আমার কাছ থেকে দূরে সরে গেছে।

আজ আর তাই কোন কবিতা লেখা হলো না
হলোনা ছন্দের সাথে হৃদয়ের কথোপকথন
রূপালী জোছনার নীরব এই মুহুর্তে আজ
স্বপ্নেরা করছে নিঃসঙ্গ রাত্রিযাপন।।


১১ই ফেব্রুয়ারী, ২০০৯

স্বপ্নবিলাস

তোমার ঐ মুখের হাসি
দেখতে বড়ই ভালবাসি
চাঁদের মত মুখটি তোমার
স্বপ্ন ছড়ায় রাশি রাশি।

সেই হাসিরই মায়াজালে
জড়িয়ে পড়ি অবিরত
কখনো যদি না দেখি তা
জমে হৃদয়ে শুধুই ক্ষত।

জোছনা রাতের এই প্রহরে
দেখি আজি তোমার স্বপন
তোমার হাসির স্মৃতির ভারে
হৃদয়ে আজ দুখের দহন।।


১০ই ফেব্রুয়ারী, ২০০৯

অব্যক্ত যন্ত্রণার কথামালা

বহুদিন আকাশভরা জোছনা দেখিনা
দেখিনা সন্ধ্যাকাশের আলো ঝলমলে তারা
তারার আলোয় এখন আর দেখা হয়না
শ্রাবণের সেই অবারিত বারিধারা।

এখন আমার আকাশে আর তারা জ্বলেনা
স্বপ্নগুলো কেন যেন আর ডানা মেলেনা
রূপালী চাঁদটিকে মনে হয় আজ বড়ই অচেনা
বুক জুড়ে আজ শুধুই অব্যক্ত যন্ত্রণা।

যন্ত্রণাগুলো আজ হৃদয়টাকে কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে
জীবনটাকে খুব অসহনীয় মনে হচ্ছে
খাঁচায় বন্দী ছটফটে পাখির মত
নীল আকাশে উড়ে যেতে ইচ্ছে করছে।।


৯ই ফেব্রুয়ারী, ২০০৯

দুঃস্বপ্নের রাত শেষে

দুঃস্বপ্নের এক রাত্রিতে
অসহ্য কিছু কল্পনাতে
সময় যে বয়ে যায়
স্বপ্নগুলো তখন শুধুই কাঁদায়।

মাঝরাতে দেখা সেই স্বপ্নেরা
ভোররাতে ফিরে আসে বারেবার
বুকের ভেতর জমে থাকা কষ্টেরা
চিৎকার করে খুলতে চায় মনেরই দুয়ার।

দুঃস্বপ্নের রাত শেষে যখনই ভোর হয়
কাকডাকা সেই ভোরে হয়ে যায় হৃদয়ের ক্ষয়
তখনই অপেক্ষায় থাকি কোনো এক নতুন ভোরের
যে ভোর আমায় সন্ধান দেবে স্বপ্নীল এক পথের।।


৮ই ফেব্রুয়ারী, ২০০৯

দিকভ্রান্ত পথিকের ভাবনা

অনেকটা পথ পাড়ি দিয়ে
জীবন নামের যুদ্ধের মাঝপথে দাঁড়িয়ে
তাকাই যখন পিছু ফিরে
মনে হয় জীবনে কিছুই পাওয়া হলো না
রয়ে গেল শুধু কিছু দুঃসহ যন্ত্রণা।

মাঝে মাঝে নিজেকে মনে হয়
জীবনযুদ্ধে পরাজিত এক সৈনিক
বিক্ষুব্ধ সুনামিতে দিকভ্রান্ত জাহাজের মতো
নিজেকে ভাবি শুধু
পথহারা এক পথিক।

সাগরের মাঝবুকে জাহাজ যখন
পালতুলে চলে যায় নীল সীমানায়
আনমনে ভাবি, হতাম যদি সেই জাহাজ
বেদনাগুলোকে সাগরের বুকে মিশিয়ে দিয়ে
সুখেরই পাল তুলে দিয়ে
হতাম সুখী অনন্তকাল, সকাল-সন্ধ্যা-সাঁঝ।।


৫ই ফেব্রুয়ারী, ২০০৯

একুশ

একুশ আমার মায়ের ভাষা
একুশ আমার প্রাণ
একুশ নিয়ে কথা বলি
একুশে গাই গান।

একুশ দিয়ে বর্ণ সাজাই
একুশ দিয়ে দেখি
একুশ নিয়ে পঙক্তি বানাই
একুশের গান লিখি।

একুশ নিয়ে স্বপ্ন দেখি
একুশ নিয়ে ভাবি
একুশ দিয়ে দেশকে গড়ি
একুশে আঁকি ছবি।

একুশ আজি হৃদয় জুড়ে
শুধু মেখে রাখি
চলো সবাই মিলেমিশে
একুশের স্বপ্ন দেখি।।


২রা ফেব্রুয়ারী, ২০০৯

ভাষা সেনানী

হে বীর সেনানী
ভাষার জন্য তোমরা যারা
দিয়েছিলে প্রাণ
আমরা তোমাদের ভুলিনি।

মায়ের ভাষাটি কেড়ে নিয়ে
যারা চেয়েছিল মোদের নির্বাক করে দিতে
তোমরা সেটি হতে দাওনি
হে বীর সেনানী, আমরা তোমাদের ভুলিনি।

মায়ের ভাষাকে বাঁচাতে
তোমরা দিয়েছিলে তোমাদের তাজা রক্ত
বুলেটের আঘাতে হয়েছিল তোমাদের হৃদয় সিক্ত
হে বীর সেনানী, আমরা তোমাদের ভুলিনি।

তোমাদের সেই রক্তের বিনিময়ে
আমরা পেয়েছি আজ বাংলা ভাষা
আজ মোরা বাংলায় পড়ি, বাংলায় শুনি
বাংলায় ধরি মোদের লেখনী
হে বীর সেনানী, আমরা তোমাদের ভুলিনি।।


২রা ফেব্রুয়ারী, ২০০৯

স্বপ্নের মৃত্যু

যদি কোনদিন আনমনে বসে
দাঁড়িয়ে ঐ জানালার ধার ঘেঁষে
আপনমনে ভেবে যাও আমায়
জেনে রেখো আমায় কভু পাবে না ফিরে
তোমার স্মৃতিরও জানালায়।

স্বপ্নডানায় ভর করে
যাও যদি কভু কল্পলোকে
জেনো আমায় পাবেনা সেথায়
তোমার কোনো স্বপ্নের মায়ায়
রইব না আর তোমার প্রতীক্ষায়।।


১লা ফেব্রুয়ারী, ২০০৯

মেঠো পথের স্বপ্ন

যখন তুমি যাও চলে
গাঁয়ের মেঠো পথটি ধরে
দীর্ঘ পথে খুঁজে পাবে
তোমার এক কাঙ্খিত পথ
যে পথের মাঝে ছুটবে তোমার
সুখেরই অনন্ত রথ।

স্বপনপাড়ের ডাক শুনে
সেই পথের প্রান্ত ধরে
যদি কভু যাও হেঁটে
জেনো তুমি পাবে আমায়
যেথায় রব তোমার আশায়।

গাঁয়ের মেঠো পথটি ধরে
শিশুরা বেড়ায় হেসেখেলে
তুমুল সে কোলাহলের মাঝে
জেনো আমি আছি সদাই
তোমার গহীণ হৃদয়ের মাঝে।।


২৯শে জানুয়ারি, ২০০৯

নদী

আমি একটা নদী খুঁজছি
যে নদী শুষে নেবে আমার সব অনুভূতি
যখন খুব কষ্টে হৃদয়ে শূণ্যতা ছেয়ে রবে
তখন পরম বন্ধু হয়ে
সে নদী আমার কষ্টগুলো তার বুকে টেনে নেবে।

আমি এমন একটা নদী খুঁজছি
যে নদী তার বিশাল নীল জলরাশি দিয়ে
ঢেকে দেবে আমার নীল রঙের কষ্টগুলো
নীল জলরাশির প্রতিটি বিন্দু দিয়ে
সে নদী ধুয়ে দেবে আমার মনের ধুলো।

আমি সেই নদী খুঁজছি
যে নদী তার স্বচ্ছ জল দিয়ে
শুভ্রতার রঙে রাঙিয়ে দেবে এ হৃদয়
যেন আর কভু এ হৃদয় হয়ে না ওঠে
দুঃসহ যাতনাময়।।


২৯শে জানুয়ারি, ২০০৯

স্বপ্ন

আজ হিমেল হাওয়ায় দাও ভাসিয়ে
তোমার মনতরী
সেই তরীতে যাও চলে ঐ
দূরের স্বপ্নপুরী।

স্বপ্নপুরীর স্বপ্নেরা সব
তোমার দ্বারে এসে
যাবে এবার তোমায় নিয়ে
দূরের পরবাসে।

পরবাসে বসে আজি
ভাবছো যেন কাকে
হারিয়ে যেতে তাকে নিয়ে
দিগন্তের শেষ বাঁকে।।


২৬শে জানুয়ারি, ২০০৯

অস্থির কল্পনা

অস্থির কিছু পায়চারী
অস্থির কিছু কল্পনা
অস্থির কিছু অনুভবে
খুঁজে ফিরি শুধু সান্তনা।


অস্থির সেই কল্পনাতে
যাই ফিরে শুধু দূর অতীতে
যেদিন তোমার হাতে হাত রেখে
হেঁটে বেড়িয়েছি মেঠোপথে।


অস্থির সেই স্বপ্নেরা মোর
হারিয়ে যায় কোন পথের বাঁকে
এলোমেলো কিছু স্মৃতির পাতায়
স্বপ্ন খুঁজি আজ দিকে দিকে।।


১৫ই জানুয়ারি, ২০০৯

স্বপ্নের বর্ষপূর্তি

আজ এই দিনটিতে
মনে পড়ে তোমায় খুব বেশী
এই দিনে তুমি এসেছিলে আমার হয়ে
স্বপ্নে রং ছড়িয়ে রাশি রাশি।

স্বপনপাড়ের দুয়ার খুলে
এদিন এসেছিলে তুমি মোর সীমানায়
রঙ্গীন করে মোর স্বপ্নরাজি
নিয়েছিলে আমায় এক দূর নীলিমায়।

সেই নীলিমার বর্ণিল নীল রং
কখন যেন হয়ে পড়েছে ফিকে
রংধনুর সাত রঙের স্বপ্নেরা আজ
ধূসর হয়ে মুখ থুবরে পড়েছে পথের বাঁকে।

এই দিনটিতে তাই আজ তোমায়
আমার খুব মনে পড়ে
পুরনো স্মৃতিগুলো আজ স্বপ্নদুয়ারে
ফিরে আসে বারে বারে।।


৫ই জানুয়ারি, ২০০৯

নস্টালজিয়া

খুব জানতে ইচ্ছে করে
তুমি কি এখনও আগের মতই আছ
নাকি অনেকখানি বদলে গেছ
এখনও কি বৃষ্টি হলে জানালার ধারে বসে
উদাস নয়নে তাকিয়ে থাকো দূর আকাশের পানে?
অস্থির দুটি নয়নে?


খুব জানতে ইচ্ছে করে
এখনও কি আগের মত
স্নিগ্ধ হাসিতে জগৎ ভরিয়ে রাখো?
শীতের এই হিমেল হাওয়ায়
উনুনের পাশে বসে
এখনও কি তাপ পোহাতে থাকো?


খুব জানতে ইচ্ছে করে
সাগরপাড়ে একা বসে
এখনও কি আগের মত
আপনমনে আমায় তুমি ভাবো?
ঘুমের ঘোরে আপনমনে
এখনও কি আমায় তুমি কল্পনাতে ডাকো?


২রা জানুয়ারি, ২০০৯

বদলে যাওয়া

ধুলোমাখা পথ মাড়িয়ে
আজ পাড়ি দিয়েছি অনেকটা পথ
জীবনযুদ্ধের এই মাহেন্দ্রক্ষণে
তাকাই যখন পিছু ফিরে
ধুলোমাখা পথের ধুলোময় কিছু স্মৃতিগুলো
আজও ডাকে আমায় হাতছানি দিয়ে।

সেই স্মৃতিগুলো যখন হাতড়ে বেড়াই
মাঝে মাঝে খুব কষ্ট হয়
আর অবাক হয়ে শুধু ভাবি
কখন এতটা বড় হলাম
একেবারে বদলে গেলাম
ধুলোগুলোকে ঝেড়ে দিয়ে
স্মৃতিগুলো আর আমায় পোড়ায় না।

অনুভূতিগুলোকে দমিয়ে রেখে
কখন যেন এক যন্ত্রমানব হয়ে উঠেছি
মানবিক সব অনুভূতিগুলোকে ধীরে ধীরে
কখন যেন জমাট বেঁধে
মনের এক কোণে ফেলে রেখেছি।।


১লা জানুয়ারি, ২০০৯

হৃদয়ের আকুতি

আমারে কেউ চলরে নিয়ে
সেই সে নদীর ধারে
যেথায় মাঝি বসে আছে
নৌকা নিয়ে পাড়ে।

দু’কুল বেয়ে নৌকাতে আজ
জল গড়িয়ে পড়ে
সেই জলেতে হৃদয় ভিজে
মিশে সাগর পাড়ে।

সাগরের সেই নোনা জলে
যায় ভেসে এই মন
তখন শুধু তোমায় ভেবে
কাটে সারাক্ষণ।।


২৪শে ডিসেম্বর, ২০০৮

স্বাধীনতা

নীল আকাশের মুক্ত হাওয়ায়
উড়িয়েছি ইচ্ছেডানা
সেই ডানাতে ভর করে আজ
যাই ছুঁয়ে আকাশের সীমানা।

মুক্ত এই আকাশ আজ
রঙিন হয়েছে কত রঙে
স্বপ্নগুলো সেই রঙে তাই
সেজেছে নানান ঢঙে।।


২৩শে ডিসেম্বর, ২০০৮

সূর্য্যস্নানের দেশ

আজ তোমায় আমি যাব নিয়ে
সূর্য্যস্নানের দেশে
দু’জন মিলে থাকবো সেথায়
খেলবো হেসে হেসে।

সূর্য্যস্নানের দেশে গিয়ে
সূয্যিমামার সাথে
দু’জন মিলে গাইবো গান
সকাল সন্ধ্যা রাতে।

জোছনারাতে তারার মেলায়
তোমার হাতটি ধরে
থাকবো বসে দু’জন মিলে
নীল সাগরের পাড়ে।।


১৩ই ডিসেম্বর, ২০০৮

অচিনপুরীর সুখপাখি

এক একটা দিন কেটে যায়
সময়ের স্রোতধারায়
আর নিজেকে প্রতিমুহুর্তে খুঁজে পাই
অস্থির এক কল্পনায়।


নিস্তব্ধ এক ঘরে
অস্থির কিছু পায়চারীতে
আর এলোমেলো কিছু কল্পনাতে
যাই চলে দূর অচিনপুরীতে।


অচিনপুরীর আকাশ থেকে
ডাকে আমায় এক সুখপাখি
দুঃখগুলো তার ডানায় নিয়ে
করে আমায় অসীম সুখী।।


১৩ই ডিসেম্বর, ২০০৮

স্বপ্নপুরী

আমাদের দেশ কবে হবে সেই স্বপ্নপুরী
দিগন্তে ওড়াবো ইচ্ছেডানার ঘুড়ি
যে দেশে থাকবেনা নরকের কীটগুলোর বাস
দিকে দিকে বয়ে যাবে শান্তির সুবাতাস।

স্বপ্নপুরীর সেই দেশে
মুদবো নয়ন শান্তির আবেশে
ফিরবো নীড়ে সব শঙ্কার পথ পেরিয়ে
ক্লান্তিকর একটি দিনের শেষে।

মোদের সে দেশ হবে সোনার বাংলাদেশ
যে দেশে মিলে মিশে রইব মোরা
ভাগ করে নিয়ে সকল দুঃখ-জরা
বানাবো মোরা একে প্রিয় স্বদেশ।।


১১ই ডিসেম্বর, ২০০৮

Thursday, June 25, 2009

হে জাতি, তুমি মোদের ক্ষমা করো

একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধে যে লক্ষ্য নিয়ে
সীমাহীন সাহস আর অসীম ত্যাগ দিয়ে
বীর সেনানীরা স্বাধীন করেছিলো তোমায়
আজ সে লক্ষ্য থেকে মোরা সরে গেছি যোজন দূরে
হে জাতি, তুমি মোদের ক্ষমা করো।


স্বাধীনতা যুদ্ধের ঘৃণ্য নরপশুরা
আজও বীরদর্পে পথঘাট দাপিয়ে বেড়ায়
আজও তাদের গাড়িতে ওড়ে মোদের প্রিয় লাল-সবুজ
আজও মোদের কর্তারা ব্যস্ত তাদের পদলেহনে
হে জাতি,তুমি মোদের ক্ষমা করো।


এত বছর পরেও মোরা পারিনি
সেই ঘৃণ্য নরপশুদের শাস্তি দিতে
তোমার মাটিতে তাদের বিচার করতে
নর্দমার সেসব কীটদের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপ করতে
হে জাতি, তুমি মোদের ক্ষমা করো।


তোমার নতুন প্রতিনিধি বাছাই নিয়ে
আজ কাটায় সময় সবাই ব্যস্ত হয়ে
থেমে নেই সেখানেও দুর্নীতিবাজদের কালো ছায়া
মোরা রুখতে পারিনি সমাজের অন্ধকারের মায়া
হে জাতি, তুমি মোদের ক্ষমা করো।।


১১ই ডিসেম্বর, ২০০৮

যন্ত্রমানব

নির্ঘুম এই শহরে
রাতজাগা এক প্রহরে
পাহাড় ঘেরা এক ঘরে
বসে আছি এই আমি
এক যন্ত্রমানব হয়ে।

আমার কোন আবেগ নেই
নেই কোন অনুভূতি
নির্বাক এক যন্ত্রমানবের মতোই্
আমায় স্পর্শ করেনা কোন ক্লান্তি।

আশেপাশের নিষ্ঠুর সব যন্ত্রমানবের পরশে
নিজেই পরিণত হয়েছি এক অনুভূতিহীন মানবে
দুঃখ,জরা,আবেগকে পাশ কাটিয়ে
সময় আজ আমায় দাড় করিয়েছে
কঠিন ও রুঢ় এক বাস্তবে।।


৯ই ডিসেম্বর, ২০০৮

প্রত্যাশিত সুর

সুরের মায়ায় হারাই আমি দূর সে নীলিমায়
তোমার চোখের নীলে আমি হারাই অজানায়
যখন তুমি ডাকো আমায় তোমার আঙ্গিনায়
তখন আমি বাঁধা পড়ি তোমার সুরের মায়ায়।

নীল সাগরের পাড়ে বসে যখন ভাবি তোমায়
হৃদয় আমার ভরে যায় তোমার মুখচ্ছায়ায়
গুনগুনিয়ে গান গেয়ে যাই তোমারই কল্পনায়
রই তাকিয়ে ঐ দিগন্তের পাড়ে তোমারই প্রতীক্ষায়।

দিনে-রাতে থাকো তুমি আমারই ভাবনায়
তুমি যদি রও পাশে, তবে রইনা অসহায়
আকাশ যখন ঢেকে যায় কালো মেঘের ছায়ায়
তবুও তুমি রাঙাও এ মন তোমার সুরের মায়ায়।।


৭ই ডিসেম্বর, ২০০৮

অচেনা শহরের অচেনা মানুষ

এক একটা দিন নিজেকে বড় অচেনা মনে হয়
জাগতিক এই ব্যস্ততার ভীড়ে
যান্ত্রিক এই শহরের যান্ত্রিক মানুষগুলোর মাঝে
নিজেকে হারিয়ে খুঁজে ফিরি মরু এই প্রান্তরে।

তিল তিল করে বেড়ে ওঠা জমাটবদ্ধ কষ্টগুলো
কখনোবা মৌমাছির চাকের মত জমাট বেঁধে রয়
ঘুণে ধরা এই শহরের ঘুণে ধরা মানুষগুলোকে
কখনোবা গ্রহান্তরের প্রাণীর মত অচেনা মনে হয়।

দূর আকাশের গ্রহের কোনো এলিয়েনের মত
মানুষগুলোকে আজ বড়ই অচেনা মনে হয়
অচেনা শহরের অচেনা মানুষগুলোর ভীড়ে
নিজেকে আজ খুব নিঃসঙ্গ মনে হয়।।


৬ই ডিসেম্বর, ২০০৮

শেকলবদ্ধ জীবন

চার দেয়ালের বদ্ধ এ ঘরটাতেই
কেটে যায় ছেলেটির দিনরাত
নিস্তব্ধ এ ঘরটিতে
শুরু হয় তার প্রথম প্রভাত।

দূর আকাশে উড়ে যাওয়া পাখির মতো
উড়ে যেতে চায় অবুঝ মন
শেকলবাঁধা এ জীবন তাকে
দেয়না হতে সেই পাখির মতন।

গাঁয়ের মেঠো পথ ধরে
ছুটে যাওয়া দুরন্ত বালকটির মতো
চায় ছুটে যেতে মন
বন্দী এ জীবন তাকে
দেয়না সেই সুখেরই ক্ষণ।।


২৬শে নভেম্বর, ২০০৮

মেঘে ঢাকা আকাশ

আকাশ আজ অন্ধকারে ছেয়ে গেছে
তারার হাসি ফুরিয়ে গেছে
থেমে গেছে সকল তারার পথ চলা
তারার আলোয় দুজনার সারা পথ হেঁটে চলা।

আমার নীল আকাশে তোমার বিচরণ
মুখরিত করে রাখতো প্রতিটিক্ষণ
মনে মনে যখনই চাইতাম তোমায়
তুমি আসতে ফিরে আমারই বাস্তবতায়।

সন্ধ্যাকাশের তারার ভীড়ে
আমার মনের গহীন প্রান্তরে
তুমি আর আসো না ফিরে
রই না আমি আর তোমার প্রতীক্ষার প্রহরে।।


৭ই নভেম্বর, ২০০৮

মধ্যরাতে নস্টাতলজিকতা

কতদিন দেখিনা তোমার সেই দু’চোখ
কতদিন পাইনা স্পর্শ তোমার সেই মিষ্টি হাতে
কতদিন অনুভব করিনা যেন
তোমার জন্য জেগে থাকা গভীর রাতে।

রাত জেগে কখনো আর
তোমার সাথে হয়না কথা
ঘুম না এলে কখনো তোমার
ঘুচিয়ে দেইনা তোমার ব্যথা।

নিকষ কালো আঁধার রাতে
চুপটি করে তোমার সাথে
হয়না তো আর কথা বলা
বেঁকে গেছে দুজনার পথচলা।।



৬ই নভেম্বর, ২০০৮

শীতের আহবান

শীতের সকালে, কুয়াশামাখা চাদর গায়ে
বসে আছি আমি ভোরের পাখি হয়ে
রাতজাগা পাখিদের বিদায় জানিয়ে
নতুন ভোরের প্রত্যাশা নিয়ে।

কোনো এক রাত জাগা ভোরে
কুয়াশা ভেজা প্রথম প্রহরে
শীতলতার পরশ নিয়ে
বসে আছি শান্তির আহবান নিয়ে।

গাঁয়ের ঐ মেঠো পথ ধরে
ছুটে চলা এক দুষ্টু বালকের বেশে
উচ্ছলতার প্রতীক হয়ে
ছুটে যাচ্ছি বন্ধুত্বের আহবান নিয়ে।।


৫ই নভেম্বর, ২০০৮

ধুলোমাখা স্মৃতি

পাওয়া-না পাওয়ার হিসেবটা কখনো বড়ই যন্ত্রণার
যখনই ভাবি জীবনে কিছুই হল না পাওয়া আমার
জীবনের এ কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে
বোধ করি খুবই অসহায় সবকিছু হারিয়ে।

ভালোবাসার অনাবৃষ্টির এই ক্ষণে
আমি বসে রই সেই সত্তার প্রতীক্ষায়
যার খানিক কোমল ছোঁয়ায় উড়িয়ে নিয়ে যাবে আমায়
ভর করে ইচ্ছে ডানায়।

পুরোনো স্মৃতিগুলোতে আজ
জমে গেছে কত ধুলো
জীবন চলার প্রতিটি বাঁকে
সেই ধুলো করে দেয় কখনো এলোমেলো।

মাঝে মাঝে মনে হয়
পারতাম যদি সেই স্মৃতি থেকে বিস্মৃত
হতাশায় মোড়া এ জীবনটা আজ
হত না বেদনার নীলে আবৃত।

তবুও চাইলেই ধুলোমাখা স্মৃতিগুলো
ভোলা কভু যায়না
নিজের মাঝে রয়ে যাওয়া মানবিকতা বোধটুকু
স্মৃতিতে এপিটাফ লিখতে দেয়না।।


৪ঠা নভেম্বর, ২০০৮

অনুভূতি

ফিরে যাওয়ার স্বাধীনতা
আজ তো আমার নেই
বেদনার নীল চাদরের ফাঁক গলে
সুখ খুঁজে ফিরি আমি সেই।


ইচ্ছেডানার পাখিটা হঠাৎ যেন
হারিয়েছে তার ডানা
মুখ থুবড়ে পড়েছে সে আজ
হারিয়ে তার সীমানা।


আমার স্বপ্নীল ইচ্ছেরা আর
ডানা মেলে উড়বেনা
দিগন্তের সেই অজানা পথে চেয়ে
তোমার প্রতীক্ষায় রইবেনা।


বেদনার সেই নীল চাদরটি আজ
বড় ভারী ভারী লাগছে
সেই ভারের বোঝায় আজ চারদিকে
শুণ্যতা বোধ হচ্ছে।।


৪ঠা নভেম্বর, ২০০৮

কল্পনা

যখনি নিবিড় করে
পেতে চাই তোমায়
তখনি দুঃস্বপ্ন এসে
থামিয়ে দেয় আমায়।

একাকী হয়ে ভাবি শুধু
কোন এক নীল জোছনায়
হেঁটে যাই তুমি আর আমি
সেই দূর অজানায়।

যেখানে জানা-অজানা পাখিরা
ডানা মেলে উড়ে যায়
নীল আকাশের শেষ সীমায়
যতটুকু দৃষ্টি যায়।

এমনই এক জোছনাস্নাত সন্ধ্যায়
কল্পনার রাজ্যে হেঁটে বেড়াই
তোমার হাতে হাত রেখে
গহীন অরণ্যে হারিয়ে যাই।।


৩রা নভেম্বর, ২০০৮

কফি হাউসের আড্ডা

আজ আমার মন ভালো নেই
মনে পড়ে পুরোনো দিনগুলো সেই
চায়ের কাপে ঝড় তোলা
পুরোনো সেই আড্ডাটি আর নেই।

কফি হাউসের টেবিলে বসে
বন্ধুদের নানারঙের কথার ভীড়ে
হারিয়ে যেত মনের সকল মেঘ
মনের মেঘ উড়ে গিয়ে মিশে যেত নীল সাগরে।

জীবনের পড়ন্ত এই বিকেলে এসে
রঙিন স্মৃতিগুলো আসে শুধু ভেসে
শীতের সকালের শিশিরভেজা কুয়াশা হয়ে
নিয়ে যায় সেই কফি হাউসের টেবিলে।।


২১শে নভেম্বর, ২০০৮

ছুটি

ভাবছি এবার আমি ছুটি নেবো
জীবনের সকল কোলাহল থেকে ছুটি
জগতের সকল পাপ-পঙ্কিলতা থেকে ছুটি
মানবিক সকল বন্ধন থেকে ছুটি।

সেই লম্বা ছুটি নিয়ে
চলে যাব কোনো এক অজানা গাঁয়ে
সবুজ বনানী ঘেরা মেঠো পথ ধরে
যেখানে দুরন্ত কিশোরেরা খেলা করে।

সেই উচ্ছলতা থেকে
জীবনের নতুন উদ্যম খুঁজে নিয়ে
সাজাবো আগামীর জীবন
শীতের ভোরে গাঁয়ের মেঠো পথে
জড়িয়ে থাকা শিশিরকণাগুলো
শুভ্র করে তুলবে আমার অনাগত ক্ষণ।।


১৬ই নভেম্বর, ২০০৮

অজানা সুরের গান

কোনো এক অজানা শহরে
নির্জন এক প্রহরে
গাইছি আমি একটি গান
অজানা কোনো সুরে।

যে সুরেতে আছে মিশে
গহীন অরণ্যে হারিয়ে যাওয়ার আহবান
যেখানে ঝাঁকে ঝাঁকে পাখিরা
গেয়ে যায় নতুনের জয়গান।

সেই নতুনের জোয়ারে আজি
উড়িয়ে কল্পনার তারকারাজি
গেয়ে যাই আজ সেই গান
যে গানে শুধু মিশে রয় পাখিরই কলতান।।


১৪ই নভেম্বর, ২০০৮

কল্পনার ফানুস

ঐ দূর পাহাড়ে, লোকালয় ছেড়ে
যাচ্ছি আমি চলে
স্মৃতিগুলো পেছনে ফেলে।

পুরোনো স্মৃতি পেছনে রেখে
নতুন দিনের স্বপ্ন নিয়ে
দিচ্ছি পাড়ি অজানা পথে
দূর পাহাড়ের সেই প্রান্তে।

যেথায় আকাশের নীল খেলা করে
মনের নীলের সাথে
নানারঙের মেঘের ভেলায়
মন ভেসে যায় সেই স্রোতে।

আমার মনের আকাশে আজ
উড়ছে ইচ্ছেঘুড়ি
সেই ঘুড়িতে ভর করে আমি
কল্পনাতে উড়ি।

কল্পনারই ফানুস উড়িয়ে
যাচ্ছি চলে সেই পথে
যে পথ ধরে হেঁটে যাবো
নির্জন এক জোছনারাতে।।


১২ই নভেম্বর, ২০০৮

আশার ভেলা

আজ স্বপ্নগুলোকে জড়ো করে
তুলে দেবো সেই ভেলায়
যে ভেলাটি যাবে ভেসে
গোধুলী বেলার সমুদ্রের মোহনায়।

কাল থেকে আমার চোখে আর
ভাসবে না কোনো স্বপ্ন
স্বপ্ন ভাঙ্গার যন্ত্রণায় আর
কাটবেনা কোনো লগ্ন।

সদ্য ফোঁটা ফুলের মত
হোক শুরু এক নতুন প্রহর
সেই আশারই ভেলায় করে
দেবো পাড়ি সমুদ্রের সুনীল প্রান্তর।।


১০ই নভেম্বর, ২০০৮

বন্দী জীবন

বহুদিন হলো আকাশ দেখিনা
দেখিনা মেঘেদের লুকোচুরি খেলা
নীল আকাশের সুবিশাল প্রান্তরে
মেঘেদের দল বেঁধে খেলা করা।

চার দেয়ালের মাঝে বদ্ধ এ ঘরটাতে
বন্দী হয়ে আছি বহুদিন
দিগন্তে বিস্তৃত বিশাল জগৎটাকে
একটু একটু করে অচেনা মনে হচ্ছে প্রতিদিন।

মেঘলা আকাশের পানে তাকিয়ে
সোডিয়াম বাতির টিমটিমে আলোতে
ধোঁয়াটে মনে হয় চারিদিক
খানিকটা প্রশান্তির প্রত্যাশায়
ছুটে যাই দিগ্‌বিদিক।।


১০ই নভেম্বর, ২০০৮

ছন্নছাড়া ভাবনা

কখনো কখনো হারিয়ে যেতে চায় এই মন
কোনো এক দূর অজানাতে
যেখানে দিগন্ত মিশে যায়
সাগরের নীল সীমানাতে।

কখনো কখনো ইচ্ছে হয়
উড়ে যেতে ঐ আকাশটাতে
পাখির মত দুটি ডানা মেলে
যাই হারিয়ে সেই নীল সীমানাতে।

কখনো কখনো ভাবি বসে
শুধু একা আনমনে
নিরব নিস্তব্ধ কোন পথের প্রান্তরে
হেঁটে চলেছি অনন্তকাল ধরে।

কখনো কখনো কল্পনাতে
হেঁটে যাই সেই সাগর পাড়ে
যেখানে নীল জলরাশি খেলা করে
দিগন্তের সাথে জোট বেঁধে।

ছন্নছাড়া এসব ভাবনাগুলো নিয়ে
ভেসে যেতে চায় এ মন সেই সাগরে
যেখানে ভাসিয়ে দেবো সকল গ্লানি
রইবেনা আর ব্যর্থতার হাতছানি।।


৯ই নভেম্বর, ২০০৮

বাদলঝরা দিন

আজ এই বাদলঝরা দিনে
শুধু তোমারই সনে
হেঁটে যাচ্ছি ঐ নীল সীমানার পানে
যাচ্ছে ভেসে মন পাখির ঐ কলতানে।

বাদলের এই হিমেল হাওয়ায়
সাথে নিয়ে শুধু তোমায়
যেতে চাই ঐ নীল সীমানায়
যেখানে পাখিরা মিষ্টি সুরে গায়।

সুরেরই সেই মিষ্টি মায়ায়
কখন যে মন জড়িয়ে যায়
ভেবে আমি কুল যে না পাই
মন যে শুধু পাশে তোমারেই চায়।।


২৮শে সেপ্টেম্বর, ২০০৮

চলে যাওয়া মানে

চলে যাওয়া মানে প্রস্থান নয়
নয় শুধু পিছু ফিরে চাওয়া
চলে যাওয়া মানে পরাজয় নয়
হয়তোবা নিজেকে হারিয়ে খুঁজে পাওয়া।


চলে যাওয়া মানে কান্না নয়
নয় শুধু না পাওয়ার বেদনা
চলে যাওয়া মানে শুধু হারানোর ব্যথা নয়
হয়তোবা কিছু অপ্রত্যাশিত প্রাপ্তির স্বান্তনা।


চলে যাওয়া মানে
শুধু প্রিয়জনকে হারানোর বেদনা নয়
নয় শুধু তার শোকে কান্না
চলে যাওয়া মানে তার জন্য হাহাকার নয়
হয়তোবা উজ্জ্বল ভবিষ্যতের প্রার্থনা।।


২৭শে সেপ্টেম্বর, ২০০৮

একজন নিঃস্বার্থ বন্ধুর আকুতি

কখনো যদি ভাবো নিজেকে একা
প্রত্যাশা করো কারো পাশে থাকা
জেনে নিও আমি আছি তোমারই পাশে
নিঃস্বার্থ এক বন্ধু হয়ে তোমারই পরবাসে।


কখনো যদি ভেঙে পড়ে তোমার হৃদয়
জীবন কভু হয় তীব্র যাতনাময়
তখন বন্ধু হয়ে শীতল ছায়ারই মত
মুছে দেব তোমার হৃদয়ের সব ক্ষত।


এমনিভাবে বলো কে ডাকবে তোমায়
এসে শুধু তোমারই আঙ্গিনায়
পাবেনা তো কাউকে এমন
যে রাঙিয়ে দেবে তোমার প্রতিটি ক্ষণ।।


২৩শে সেপ্টেম্বের, ২০০৮


নীড়ে ফিরে যাই

নীড়ে ফিরে যাই
শেকড়ের ইশারায়
চলতে চলতে পথে
হঠাৎ থমকে দাঁড়াই।


মাঝে মাঝে ভেবে যাই
কত স্মৃতি রেখে যাই
বারে বারে নাড়া দেয়
মনেরই জানালায়।


কখনো বা বসে ঠায়
ভাবি শুধু আমি হায়
পারতাম যদি যেতে ঐ
স্মৃতিরও মনিকোঠায়।।

একটি শঙ্খচিল বা শালিকের প্রত্যাশায়

আজ তোমার মন খারাপ মেয়ে
জানালার ধারে বসে আছো
ঐ দূর আকাশের পানে
অপলক চোখে তাকিয়ে।


বসে আছো একটি আশায়
শঙ্খচিল কিংবা শালিক এসে
উড়িয়ে নিয়ে যাবে তোমায়
কোনো এক দূর পরবাসে।


সেই দূর পরবাসে গিয়ে
দুঃখগুলোকে উড়িয়ে দিয়ে
আসবে ফিরে শুভ্রতার পরশ নিয়ে
সেই শঙ্খচিল বা শালিকের ডানায় ভর করে।।


১৭ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮

দূর আকাশে হারিয়ে যাবো

আজ আমি তারা হয়ে
দূরের সেই আকাশ ছোঁবো
নীল আকাশের সেই তারার মাঝে
হারানো আমায় খুঁজে পাবো।


জোৎস্নারাতের সেই তারার মায়ায়
একদিন আমি হারিয়ে যাবো
নীল চাঁদোয়ার কালো ছায়ায়
নির্ঘুম কোনো রাত কাটাবো।


দূর আকাশের তারা হয়ে
হারাই যদি কোনো সাঁঝে
খুঁজোনা কভু আমায় তুমি
পাবেনা আমায় তোমার মাঝে।।


১৫ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮

সেই কৈশোর

মনে পড়ে সেই কৈশোর
স্মৃতিময় সেই প্রতিটি ভোর
কুয়াশাভেজা সবুজ পথ মাড়িয়ে
ছুটে চলা সব সীমানা পেরিয়ে।


কত ছুটে যেতাম সেই সবুজের বাগানে
ছিঁড়ে নিতাম কত ফুল সন্তর্পনে
ফুল দিয়ে গাঁথা মালা ছিল কত সযতনে
শুকিয়ে যাওয়া সেই ফুল রয়ে যেত হৃদয়ের গহীনে।


দিনগুলো তো আর কভু আসবেনা ফিরে
পারব না কখনো যেতে সেই সবুজের পথে প্রান্তরে
দুরন্ত হয়ে ছুটে গিয়ে সেই বাগানে
নেবো কখনো কোনো ফুল ছিঁড়ে।।


১৪ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮

বন্ধু, তোমারই প্রতীক্ষায়

যখন ডুবে যায় সেই পঞ্চমীর চাঁদ
আকাশের সেই নীল সীমায়
প্রকৃতির সেই মাহেন্দ্রক্ষণে
মনে পড়ে আমার শুধু তোমায়
বন্ধু, তুমি আসবে কি একটু আমার পাশে?
রবে কি আমার এই অন্তর জুড়ে?


আকাশে যখন মেঘের ঘনঘটা
আচ্ছন্ন করে আমার এই হৃদয়
মনে পড়ে আমার শুধু তোমায়
তোমার সাথে যাপিত সেই প্রতিটি সময়
বন্ধু, তুমি আসবে কি আবার ফিরে?
আমার এই অন্তর জুড়ে?


কুয়াশা ভেজা প্রতিটি ভোরে
তোমায় খুবই মনে পড়ে
ইচ্ছে করে বারে বারে
যাই ফিরে শুধু তোমারই দ্বারে
বন্ধু, তুমি ডাকবে কি আমায় তোমার দ্বারে?
কুয়াশাচ্ছন্ন সেই ভোরের প্রহরে?


১০ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮

স্বপ্ন নিয়ে

আজ আমি কোথাও যাবনা
শুধু বসে রব তোমারই প্রতীক্ষায়
সাগরের সেই তীরে
যেখানে গাঙচিলেরা উড়ে যাবে
সেই চেনা পথ ধরে।

সাগরের সেই পাড় ঘেঁষে
যেতে চাই সেই দূর দিগন্তে
সাথে নিয়ে শুধু তোমাকে
তুমি যাবে কি আমার সাথে?

ধুধু বালুময় সেই সাগর পাড়ে
আজও বসে আছি আমি একা
তোমাকে সাথে নিয়ে চলার প্রত্যাশায়
দিগন্তের সেই শেষ সীমায়।।


৮ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮

মনে করো

মনে করো এক বিকেলে হাঁটছি দুজনে
হাত দুটি ধরে
সেই গহীন অরণ্যে
যেখানে পাখিরা ডাকে গাছের ডালে।

পাখির কলতানে মুখরিত সেই বিকেলে
যদি যেতে চাও ফিরে বারেবারে
ডেকে নিও আমায় তোমারই কাছে
আমায় পাবে তুমি তোমারই শিয়রে।

এমন করে বলো কে ভালবাসবে তোমায়?
কে দেবে তোমায় সান্তনা?
যখন নিশিরাতের সীমাহীন নিস্তব্ধতা
দেবে তোমায় অসহ্য যন্ত্রণা।।


৮ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮

ফিরে যাওয়ার কষ্ট

আজ কিছু লিখতে পারছিনা
শুধু ভাবছি ফিরে যেতে হবে আমায়
সেই আগের ঠিকানায়
দম বন্ধ করা সেই গুমোট আবহাওয়ায়।

আমার স্বপ্নীল ইচ্ছেরা
অনেকদিন আর ডানা মেলে উড়বেনা
সেই দম বন্ধ করা গুমোট পরিবেশে
ইচ্ছেগুলো আর আলোর মুখ দেখবেনা।

সাগর হয়তো আমায় আর
কাছে টেনে নেবেনা
হয়তোবা তার বিশাল নীল জলরাশি
আমায় আর খুঁজবেনা।

সাগরের সেই বিশালতার ছোঁয়া
আমায় হয়তো আর রাঙাবেনা
কষ্ট পেলে হয়তো কখনো আর
এমনিভাবে লিখবোনা।।


৩রা সেপ্টেম্বর, ২০০৮

মনে কি পড়ে?

মনে কি পড়ে তোমার সেই দিন?
যেদিন আমার হাত দুটি ধরে
তুমি হাঁটছিলে সেই দিগন্তের পাড়ে
গাইছিলো সেই পাখিগুলো মাতাল করা সুরে।

মনে কি পড়ে তোমার সেই দিন?
যেদিন অসহ্য যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে
তুমি ডেকেছিলে আমায় তোমার পাশে
আমি এসে বসেছিলাম অসুস্থ তোমার শিয়রে।

মনে কি পড়ে তোমার সেই দিন?
যেদিন তুমি আর আমি হেঁটেছিলাম
সেই নীল সাগরের পাড়ে
গোধুলী বেলায় সাগরের নীল জলরাশি,
আছড়ে পড়ছিল তোমার শাড়ীর আঁচলে।

হয়তো তুমি ভুলে গেছ সোনালী সেই অতীত
আমি যা গেঁথে রেখেছি হৃদয়ে
যখন তোমায় মনে পড়ে
যাই ফিরে সেই স্বর্ণালী সময়ে ।।


২রা সেপ্টেম্বর, ২০০৮

আমি আজ চোখ ভেজাব সমুদ্রের জলে

দেখো ডাকছে আমায় সেই নীল সমুদ্র
ডাকছে আমায় তার কোলে
আমি আজ চোখ ভেজাব সমুদ্রের জলে।

পাহাড়ঘেরা এই নির্জনতায় বিষন্ন আমার মন
তাই ডাকছে আমায় সেই প্রিয় সমুদ্র তার পাড়ে
আমি আজ চোখ ভেজাব সমুদ্রের জলে।

পড়ন্ত বিকেলের সেই সূর্যটা যখন
অস্ত যায় দিগন্তেরই কোলে
সীমাহীন জলরাশি পেছেনে ফেলে
আমি আজ চোখ ভেজাব সমুদ্রের জলে।

অনেকদিনের জমে থাকা কান্নাগুলো
এখন জমাট বেঁধেছে
তাই জমাটবদ্ধ কান্নাগুলো সঁপে দিতে
আমি আজ চোখ ভেজাব সমুদ্রের জলে।।


১লা সেপ্টেম্বর, ২০০৮

মিষ্টি সেই হাসি

চাঁদের হাসির মত তোমার এই উচ্ছলতা
ভাবায় আমায় কত
ইচ্ছে করে তোমার কাছে
ফিরে আসি অবিরত।

কখন যেন তোমার সেই হাসিতে
ডুবে যায় আমার এই মন
ইচ্ছে করে থাকতে বসে
হাসির মানুষটির পাশে সারাটিক্ষণ।

তোমার সেই ভেজা হাসি
প্রেরণা জোগায় আমায় প্রতিটি কাজে
দুঃসহ একাকীত্ব যখন আমায় রাখে ঘিরে
ফিরে যাই শুধু তোমার সেই হাসির মাঝে।।


২৭শে আগষ্ট, ২০০৮

মিষ্টি মেয়ে

মিষ্টি হাসি জড়িয়ে আছে
মেয়েটির ঐ ঠোঁটে
যাচ্ছে ভেসে সেই মেয়েটি
উচ্ছলতার স্রোতে।

কপালে তার লাল টিপ
লাগছে যেন এক পরী
দীঘল কালো চুলের ঘোরে
যায় ভেসে মন তরী।

সেই তরীতে যাই যে ভেসে
ভাবালুতার ধারে
কখন যেন মনের কোনে
ঠাঁই করে দেই তারে।।


২১শে আগষ্ট, ২০০৮

সাগরের হাতছানি

দেখো, ডাকছে আমায় সেই নীল সাগর
হাতছানি দিয়ে
সে আমায় দিয়েছে কথা
শুষে নেবে সব কষ্ট
তার নীল জলরাশি দিয়ে।

সাগরের সেই হাতছানি
ভাবায় আমায় সারাক্ষুনি
ইচ্ছে করে যাই ছুটে সেই সাগর তীরে
ভুলে গিয়ে সব অতীতের গ্লানি।

সাগর আমায় দিয়েছে কথা
আপন করে নেবে আমায়
কষ্টগুলো সব ধুয়ে নিয়ে
জীবন ভরিয়ে দেবে উচ্ছলতায়।।


১৯শে আগষ্ট, ২০০৮

স্বপ্নবিলাসী মেয়ে

ভেজা চুলে একটি মেয়ে
শুভ্র হাসির পরশ বুলিয়ে
তাকিয়ে আছে দূর আকাশে
উড়তে থাকা পাখির পানে।

পাখিগুলো উড়ছে শুধু
নীল আকাশের সীমানায়
ডানা মেলে যাচ্ছে উড়ে
দূর আকাশের প্রান্তরে।

মেয়েটি এখন তাকিয়ে আছে
পাখিদের ঐ ঝাঁকটিতে
হয়তো তারও ইচ্ছে করে
সেই ঝাঁকে মিশে যেতে।

পারতো যদি সে পাখির মত
ডানা মেলে উড়তে
উড়ে গিয়ে সেই দূর আকাশের
শেষ সীমানায় হারিয়ে যেতে।।


১৯শে আগষ্ট, ২০০৮

আঁধার ঘরে একটি মেয়ে

আঁধার ঘেরা একটি ঘরে
বসে আছে একটি মেয়ে
মুখে তার মিষ্টি হাসি
ঝরছে স্নিগ্ধতার পরশ হয়ে।

মেয়েটি এখন আছে বসে
প্রিয় মানুষটির পথ চেয়ে
একলা ঘরে চুপটি করে
কাটছে তার দিনগুলো যে।

মানুষটি আজ অনেক দূরে
ব্যস্ত আছে অন্য শহরে
একদিন সে আসবে ফিরে
মেয়েটি আছে সেই আশাতে।

মানুষটি যখন আসবে ফিরে
দুজন মিলে বাঁধবে যে ঘর
সুখের জোয়ার বইবে সে ঘরে
আমৃত্যু সময়টি ধরে।।


১৬ই আগষ্ট, ২০০৮

একটি সুন্দর কবিতার প্রত্যাশায়

আমাকে তোমরা কেউ একটি কবিতা দেবে ?
যে কবিতায় নেই কোন হতাশার কথা,
নেই কোন ক্ষয়ে যাওয়া স্বপ্নের ব্যাথা।

আমাকে তোমরা কেউ একটি কবিতা দেবে ?
যে কবিতায় নেই কোন না পাওয়ার বেদনা,
হতাশায় পুড়ে যাওয়া কোন মানুষের কান্না।

আমাকে তোমরা কেউ একটি কবিতা দেবে ?
যে কবিতায় আছে আগামী দিনের উজ্জ্বলতার স্বপ্ন,
যেদিনের আগমনী বার্তায় আমি ভুলে যেতে পারি
ফেলে আসা কষ্টের দিনগুলোর প্রতিটি লগ্ন।

আমাকে তোমরা কেউ একটি কবিতা দেবে ?
যে কবিতায় থাকবে অনাগত ভবিষ্যতের বার্তা,
রঙধনুর সাতটি রঙের মত জীবনকে রাঙিয়ে দেয়া
কোন সুন্দর ভবিষ্যতের নিশ্চয়তার কথা।

আমি সেই কবিতা লিখতে চাই,
যে কবিতায় থাকবে শুধু আশার আলো,
দুঃখ,হতাশা,অন্ধকার উড়িয়ে দিয়ে যে কবিতা
জ্বালবে শুধু শুভ্রতার আলো।।


২৫শে জুলাই, ২০০৮

নিশ্চুপ এই মাঝরাতে

নিশ্চুপ মাঝরাত এখন এই শহরে
নিভে গেছে সব আলো
প্রতিটি পথের প্রান্তরে।

রাতজাগা সব পাখিগুলো
এখন ঘুমিয়ে পড়েছে
স্বপ্নগুলো বুকে নিয়ে
শুভ্র একটি ভোরের আশায় দিন গুনছে।

হারিয়ে যাওয়া দিনগুলোতে
দুরন্ত হয়ে ছুটে যাওয়া পথের শেষে
ইচ্ছে করে ছুটে যেতে
শৈশবের সেই ছোট্ট শিশু হয়ে।

আজ সেই শৈশব নেই
নেই কোন কোলাহল
নিরব নিস্তব্ধ হয়ে গেছে
সকল পথের চলাচল।।


২২শে জুলাই, ২০০৮

বৃষ্টিভেজা কষ্ট

যখন অঝোর ধারায় বৃষ্টি নামে
দমকা হাওয়ায় শরীর দোলে
ইচ্ছে করে সেই দূরের পথে
হেঁটে বেড়াই তোমার সাথে।

বৃষ্টিভেজা এই দিনগুলোতে
তোমায় বেশী মনে পড়ে
তখন তো খুব ইচ্ছে করে
তোমার কাছে ছুটে যেতে।

কালো মেঘের এই আকাশ বেয়ে
যখন অঝোর ধারায় বৃষ্টি নামে
তখন শুধু ভাবি আমি
হয়তো কাঁদছো তুমি এমনি করে।

দুচোখ বেয়ে যখন তোমার
অশ্রু ঝরে অঝোর ধারায়
তখন কি তোমার পড়েনা মনে
কত কষ্ট দিয়েছিলে আমায় ?


২১শে জুলাই, ২০০৮

জোছনারাতে এই আমি

জোছনা রাতে তারার দেশে
হাটছি পথে একা
আপনমনে গুনছি তারা
পথ যে আজ আঁধারে ঢাকা।

ভাবনাগুলো মোর মেলছে ডানা
চায় যে উড়তে সেই আকাশেতে
যায় না তারে বেঁধে রাখা
মনের এই মনিকোঠাতে।

আকাশে আজ তারারা হাসে
ছড়িয়ে দিয়ে আলো
শুভ্রতার পরশ বুলিয়ে
মুছে দিয়ে যায় হৃদয়ের সব কালো।

মেঘের কোলে সেই স্বপ্নরাজ্যে
যায় ছুটে যেতে এই মন
চারপাশের এই তারকারাজি
ইচ্ছেটাতে সায় দেয় প্রতিটিক্ষণ।

আমি আজ হেঁটে যাই
সেই জোছনাস্নাত পথটি ধরে
হয়তো পাব তারার দেখা
এই আশাটি মনে করে।।


১৫ই জুলাই, ২০০৮

পাখি হতে ইচ্ছে করে

বসে আছি একা এই নির্জন ঘরটিতে
জানালার পাশে বসে তাকিয়ে দেখছি
সেই দূর আকাশের নাম না জানা পাখিটিকে।

পাখিটি কত স্বাধীন
চাইলেই সে উড়তে পারে সেই দূর অজানায়
ইচ্ছে হলেই ডানা মেলে যেতে পারে
সেই নীলাকাশের শেষ সীমানায়।

ইচ্ছে করে সেই পাখির মত
ডানা মেলে সেই দূরাকাশে উড়তে
মনের সব কষ্টগুলো আকাশে উড়িয়ে দিয়ে
আসব ফিরে আবার শুভ্রতার পরশ নিয়ে।

কিন্তু আমি তো পাখি হতে পারব না
পারব না পাখির মত উড়ে যেতে
সেই দূর অজানায় কষ্টগুলো ফেলে আসতে
ডানাদুটি মেলে দিয়ে আকাশের নীলে
নিজেকে রাঙিয়ে তুলতে পারব না।

তাই ভেবে এখনো বসে আছি
এই নির্জন ঘরটিতে
কষ্টগুলোকে নিজের বুকে চেপে
হয়তবা কখনো পাখি হব
অপেক্ষায় আছি এই অকল্পনীয় আশাটিতে।।


১৩ই জুলাই, ২০০৮

সাগরপাড়ের স্বপ্নরাজি

আমি আজ চোখ ভেজাব সমুদ্র জলে
ভেসে যাব সমুদ্রের সেই নীল জলরাশিতে
ছোট্ট একটি ভেলা নিয়ে পাড়ি দেব
অথৈ সাগরের সেই শেষ না হওয়া প্রান্তে।

তুমি কি যাবে আমার সাথে সেই ভেলায় ?
আমরা দুজনে যাব সেই দূর অজানায়
যেখানে দূর-দিগন্তে আছে শুধু সীমাহীন জলরাশি
সেই জলরাশিতে হারিয়ে যেতে ইচ্ছে হয় দিবানিশি।

সেই ভেলায় পাড়ি দিয়ে তোমায় নিয়ে
যেতে ইচ্ছে হয় দূরের কোন দেশে
যেখানে থাকবেনা কোন অজানা আশংকা
থাকব শুধু তুমি আর আমি
আর থাকবে সাগরের মত বিশাল স্বপ্নরাজি।।


১০ই জুলাই, ২০০৮

দূরন্ত ছেলেটি

সেদিনের সেই দূরন্ত ছেলেটি
আজ পথ হাঁটছে একা
কেউ তো আর আসে না ফিরে
তার গন্তব্য আজ বড়ই আঁকাবাকা।

সেদিনের সেই উচ্ছল ছেলেটি
আজ ঝিমিয়ে পড়েছে অস্তমিত সূর্যের মত
নিরব হয়ে গেছে তার পথচলা
জমেছে হৃদয়ে তার প্রচুর ক্ষত।

সেই ছেলেটি এখন আর আকাশ দেখে না
দেখতে পায়না সন্ধ্যাকাশের তারার মেলা
বর্ষাস্নাত সন্ধ্যায় জানালার পাশে বসে
তারাগুলো আর তাকে ভাবালুতায় প্রলুব্ধ করেনা।।


৯ই জুলাই, ২০০৮

মা এবং দেশ

তুমি কি আমায় একটা মা দিতে পার ?
যে মা আমায় আগলে রাখবে সারাক্ষণ
দুঃখ,জরা,ক্লান্তিতে শান্তির পরশ বুলিয়ে
আমাকে ছায়ার মত ঘিরে রাখবে প্রতিক্ষণ।

তুমি কি আমায় একটা দেশ দিতে পার ?
যে দেশ আমাকে লালন করবে তার কোলে
হয়ে যদি পড়ি কখনো নিঃসঙ্গ,অসহায়
সে দেশ আমায় কখনো যাবেনা ছেড়ে চলে।

এই দেশ তো আমার মায়ের মত
দুঃখ-যন্ত্রণায় যখন নিজেকে অসহায় মনে হয়
দেশ ধুয়ে মুছে দিয়ে যায় হৃদয়ের সমস্ত ক্ষত
ঠিক যেন সন্তানের মাথায়
হাত বুলিয়ে দিচ্ছে তার মা অবিরত।।


৮ই জুলাই, ২০০৮

অনুভূতিশূণ্য এই আমি

ডায়েরীর ছেঁড়া পাতার মত
ধূসর হয়ে গেছে আমার স্মৃতি
এলোমেলো ভাবনাগুলো আজ
মনের জানালায় কড়া নাড়ে নিরবধি


কখনো ভাবতে পারিনি
এতটা অনুভূতিশূণ্য হয়ে পড়ব এই আমি
বুঝতে পারিনি এভাবে কখনো
হয়ে পড়ব অন্তর্যামী


পুরানো সেই স্মৃতিগুলো এখন
আমায় আর কাঁদায় না
কাছের মানুষের দেয়া কষ্টগুলো
নিজেকে আর ভাবায় না।।


২রা জুলাই, ২০০৮

Wednesday, June 24, 2009

ইচ্ছে করে

ইচ্ছে করে আকাশেতে
মেঘ হয়ে ভাসতে
পাখির মত ডানা মেলে
সেই সুদূরে উড়তে

মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে
ভেসে যাই সেই সুদূরে
নদীর সেই আঁকা-বাঁকা স্রোতে

সেই স্রোত মিশে যায় বিশাল সাগরে
সকল গ্লানি ধুয়ে মুছে নিয়ে
জীবনকে রাঙিয়ে দেয় শুভ্রতার চাদরে

কখনো আবার ইচ্ছে হয়
আকাশের মত বিশাল হতে
রঙধনুর সাতটি রঙ হয়ে
নিজের মনকে রাঙিয়ে দিতে।।


২৫শে জুন, ২০০৮

নিঃসঙ্গ মেয়েটি

কোন এক সুন্দরী রাতে
জানালার ধারে একা বসে
মেয়েটি আছে নির্ঘুম হয়ে
আকাশের তারাগুলো হাসছে অঝোরে
শুধু তার পানে তাকিয়ে


হয়তো সে ভাবছে তার প্রিয় মানুষটিকে
যে আজ চলে গেছে বহুদূরে
কোন এক দূর অজানায়
রাতের আকাশের তারা হয়ে
যে চলে গেছে কোন দূর পরবাসে


জোছনা রাতের তারা গুনে
তাকিয়ে ঐ আকাশের পানে
কেটে যায় মেয়েটির একাকী সময়
স্মৃতিগুলো তার হয়ে ওঠে বেদনাময়।।


২৭শে জুন, ২০০৮

আজ থেকে

আজ থেকে আমি আর কাঁদবোনা
তোমার চোখে চোখ রাখবোনা
আমার পৃথিবীতে শুধু আমি একা
সেখানে তুমি কখনো আসবেনা

আজ থেকে আমি আর পেছন ফিরে চাইব না
হাতছানি দিয়ে কেউ আমায় আর ডাকবেনা
পড়ন্ত বিকেলে, গোধুলী বেলায়
হাঁটব একাকী সেই অজানায়

ফেলে আসা স্মৃতি যদি কখনো তোমায় কাঁদায়
কখনো যদি চাও ফিরে আমায়
আমি আর ফিরে আসব না
আমাকে আর কাছে পাবে না।।


২৪শে জুন, ২০০৮

এখন আমি

এখন আমি অন্য মানুষ
নিজেকে নতুন করে চিনতে পারছি
ভাবনাগুলো একসাথে করে
নতুন করে ভাবতে শিখছি

এখন আমি আগের মত
আঘাত পেয়ে ভেঙ্গে পড়িনা
আঘাতগুলো আগের মত
আর আমাকে কষ্ট দেয়না

এখন আমি অনেক বড়
নিজেকে নতুন করে বুঝতে শিখেছি
প্রয়োজনে কাউকে কাছে না পেলে
নিজের হাতে সেই প্রয়োজন মেটাতে পারছি

এখন আমি কবিতার ছন্দের মত
নিজের ভাবনাগুলো মেলে ধরি
ভাবনাগুলো জড়ো করে
কেন্দ্রীভূত করতে পারি

এখন আমি নতুন করে
আমাকে নিয়ে ভাবতে শিখেছি
পুরোনো স্মৃতিগুলোকে মনের জানালা থেকে সরিয়ে
আগামী নিয়ে ভাবতে পারছি

এখন আমি ভাল আছি
একা একা পথ চলতে শিখেছি
সকল জরা-জীর্ণতা দূরে সরিয়ে
জীবন নিয়ে নতুন দিনের স্বপ্ন দেখছি।।


২৪শে জুন, ২০০৮

সাগর

তোমরা কি কেউ সাগর দেখেছ ?
সাগরের সেই নীল জলরাশি ?
যেখানে দিগন্তে মিশে যায়
সূর্যের সেই বাঁধভাঙ্গা হাসি

সাগরের কাছে গিয়ে কখনো
তোমাদের কষ্টের অনুভূতিগুলো কি বলো নি ?
সেই অনুভূতির কথা শুনে
সাগর কি তোমাদের কখনো সান্তনা দেয়নি?

এই বিশাল সাগর, এই নীল জলরাশি
তোমাদের ঘিরে আছে সারাক্ষণ
যখনি একাকীত্ব আচ্ছন্ন করে তোমাদের
সাগর ছুটে আসে তোমাদের কাছে প্রতিটিক্ষণ।।


২৩শে জুন, ২০০৮

বৃষ্টি ভেজা রাতে

এই বৃষ্টি ভেজা রাতে
তোমার হাত দুটি ধরে এই হাতে
যাব সেই দূর অজানাতে

যেখানে থাকবেনা কোন অন্ধকারের হাতছানি
থাকবেনা কোন অশান্তির মর্মবাণী
থাকবে শুধু জোছনার আলো
যে আলোতে ভেসে যাবে সব কালো

তোমাকে নিয়ে আমি যেতে চাই অনেক দূরে
বৃষ্টিতে ভিজে তোমার হাত দুটি ধরে
হারিয়ে যেতে ইচ্ছে করে সেই মায়াবী পথ ধরে।।


২৩শে জুন, ২০০৮

একজন শাশ্বত সত্য

তুমি কি শুনতে পাচ্ছ শাশ্বত
তোমাকে নিয়ে এত মানুষের আকুতি
তুমি কি অনুভব করতে পারছ শাশ্বত
তোমার প্রতি এত মানুষের সহানুভূতি


কখনো ভেবনা নিজেকে একা
আমরা আছি তোমারই পাশে
সকাল-সন্ধ্যা সারাবেলা
তুমি থাকবে আমাদেরই মাঝে।।


২২শে জুন, ২০০৮

আকাশ

তুমি কি আকাশ ছুঁতে পারো ?
পার কি সে আকাশে মিশে যেতে ?
যখন বিশাল আকাশ মিশে যায় দিগন্তে
পারো কি সেই বিশালতায় হারাতে ?

আকাশের বিশালতার দিকে তাকিয়ে
তোমার কি নিজেকে ক্ষুদ্র মনে হয় না ?
সেই বিশালতার কথা ভেবে
কখনো কি নিজের মনটা কে বড় করতে ইচ্ছে করে না?


২১শে জুন, ২০০৮

তোমাকে চাই

তুমি কি রাখবে তোমার হাত দুটো
আমার এই হাতে ?
যাবে কি আমার সাথে
সেই দূর অজানাতে ?

তুমি কি শুনবে আমার গান ?
সাগর পাড়ে বসে
পড়ন্ত বিকেলে, গোধুলী বেলায়
একটু মিষ্টি হেসে?

তুমি কি তোমার সেই মিষ্টি হাসি দিয়ে
রাঙিয়ে দেবে আমার মন ?
যখন খুব কষ্টে কাউকে কাছে না পেয়ে
তোমায় খুঁজে ফিরব সারাক্ষণ ?

যখন সন্ধ্যা নামে
আকাশে তারা হাসে
দমকা হাওয়া হয়ে
শান্তির পরশ বুলিয়ে
তুমি বসবে কি আমার পাশে ?

চারপাশে যখন দেখি হতাশার কালো ছায়া
আমার গন্তব্য হয়ে ওঠে অজানা
তখন ভোরের আলোর মত শুভ্র হয়ে
তুমি কি দেবে না আমায় নতুন দিনের ঠিকানা?

১৮ই জুন ২০০৮